কল্যাণ সেনগুপ্ত
“আপনি কী করেন?”
“তেমন কিছু না। শুধু স্বপ্ন দেখাই।”
“শুধু স্বপ্ন? স্বপ্ন দেখে ছেলে মানুষ হবে?”
স্বামীজির উজ্জ্বল প্রশান্ত মুখে সেই মৃদু হাসি হাসি ভাব ঝুলে রইল। “বুকের অন্তস্থলে স্বপ্নটা গেঁথে দেওয়াই আমার কাজ। তারপর তাকে লালন পালন করি, মানে গাছে জল দিই।”
হতাশ মুখে স্বপন বলল – “ও স্বপ্নও দেখতে চায় না। তাহলেই তো খাটতে হবে। ও তো সব কিছুতে পিছিয়ে পড়া ছেলে।”
“ওতেই হবে। শুধু দেখতে হবে স্বপ্নটা মনের মধ্যে ধরে রাখতে পারে কিনা।”
“ওতেই হবে?”
“হ্যাঁ।”
“তারগুলো ঠিক মত বাঁধতে হবে, তবেই সুর বেরোবে।”
না বুঝে ম্লান হাসল দুজনে।
প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যে একটা আশ্রম, অনেকটা জমি নিয়ে। মোটর গাড়ি অবধি পুরোটা যায় না। টিনের চালার ঘর। দেয়াল কিছুটা ইঁটের, কিছুটা দরমার। স্বামীজি বসে আছেন একটা ঘরে জলচৌকিতে। সামনে একটা সাধারণ চেয়ার টেবিল। একটা কাঠের আলমারি। কিছু বইপত্র এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে। বাইরে যে ছেলেগুলোকে স্বপন আর মালা দেখল, তাদের দেখেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। এইরকম ছেলেদের সাথে তার ছেলে থাকবে ভাবতেই পারল না। কেমন মলিন দৈন্যভাব মুখে চোখে। স্বপন অনড় যে ছেলেকে এখানেই রাখবে। স্বামীজি সবাইকে নেন না।অনেক দেখে নেন। স্বপন বলল – “আপনি জানেন না স্বামীজি, আমাদের দুজনের রাতের ঘুম চলে গেছে ওর চিন্তায়। কোথায় যে মন পড়ে থাকে কে জানে। দু’ দুটো বছর চলে গেছে। পড়াশুনাতে একেবারেই মন নেই। আমরা ওকে নিয়ে কী করব বুঝতে পারছি না। নিজের ছেলে বলে বলছি না, ছেলে হিসেবে ও খারাপ নয়। অনেক মায়াদয়া শরীরে। রাস্তায় ঘাটে বেড়াল কুকুর দেখলেই তাকে কোলে তুলে নেবে। দোকান থেকে বিস্কুট কিনে, দুধ কিনে খাওয়াবে। ওদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট করবে। কিন্তু পড়াশুনা করবে না।”
স্বামীজি ধীরে বললেন – “সব মানুষ এক হয় না।”
“কিন্তু দু দুটো স্কুল ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে ফেল করার জন্যে। এখন বাড়িতে বসা। অফিসের বন্ধু, আত্মীয়স্বজনের কাছে প্রচুর প্রশ্নের মুখোমুখি আর হতে পারছি না। নিজের ভাল কিসে সেটা ভাবে না।”
স্বামীজি শুনলেন। তারপর ধীরে বললেন – “আমি ওসব দেখি না। ফেল পাশ দেখি না।”
স্বপন বলল – “বুঝতেই পারছেন, যখন আমরা থাকব না, তখন তো কিছু নিজে করে খেতে হবে। ওর বন্ধুরা ক্লাসে ওকে রেখে উঁচু ক্লাসে চলে গেছে। পিছিয়ে পড়া ছেলেকে কেউ বন্ধু করে না। এখন ওর কোনো বন্ধুও নেই। জীবন সমন্ধে হতাশ। গুটিয়ে গেছে ছেলে। ভয় লাগে মাথাটা খারাপ হবে না তো?”
স্বামীজি হাসি হাসি মুখে চেয়ে আছেন দেখে অসহায় মুখে স্বপন বলল – “এই ছেলেকে কি আপনি নেবেন?”
উনি মাথা নাড়েন – “হ্যাঁ, দেখে তো নেবই।”
“কী দেখেন?”
“ঐ যে বললাম, স্বপ্ন দেখতে জানে কিনা, সেটা ধরে রাখতে জানে কিনা। যে পারে তাকে নিই।”
মালা হতাশ স্বরে বলে – “সেটা অবশ্য আমরা কোনোদিন জানতে চাইনি।”
স্বামীজি স্বপনের হাতের ওপর নিজের হাত রাখলেন। বললেন – “ওকে দু’দিনের জন্যে আমার আশ্রমে রেখে যেতে পারেন?”
“অর্জুন যদি চায় রেখে যাব। কিন্তু আপনি কী চাইছেন?”
“দু’দিন আমাদের সাথে রেখে দেখতে চাই, কথা বলতে চাই ওকে ভেঙে আবার গড়া যাবে কিনা।”
মালা জিজ্ঞাসা করে – “কত ছাত্র আছে আপনার এই অনাথ আশ্রমে?”
মুখের হাসিটা মিলিয়ে চোয়াল শক্ত হল। একটু গম্ভীর হলেন। শান্ত স্বরে বললেন – “হবে তিরিশ বত্রিশ। তবে সবাই কিন্তু অনাথ নয়। অনাথ বললে নিজেদেরই লজ্জা করে। আমরাই কেউ তাকে অনাথ করেছি। কেউ কেউ খুব গরীব স্কুলছুট, কিন্তু পড়াশুনা চালাতে চায়। আসুন আপনাদের স্কুলটা দেখাই।”
স্বপন আবারও বলল – “স্বামীজি, ওকে নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত। মনের ডাক্তারের কাছে যেতে বলছে অনেকে। দেখুন যদি কিছু করতে পারেন তো, আমরা খুবই উপকৃত হব।”
স্বামীজি হাঁটতে হাঁটতে বললেন – “ওকে রেখে গেলে কিন্তু অন্তত ছয় মাস আপনারা ছেলের কাছে আসতে পারবেন না দেখা করতে।”
স্বপন অবাক হয় – “ছয় মাস?”
“হ্যাঁ, ছয় মাস পরে আমি বলব আপনারা কতদিন পরে আসতে পারবেন। ভেবে দেখুন।”
মালার চোখ ছলছল করে ওঠে। এমনিতেই এই গ্রাম্য পরিবেশ তার একদম পছন্দ হয়নি। বাড়িগুলোও পাকা নয়। ছেলেগুলোর সঙ্গে অর্জুন মানিয়ে নিতে পারবে কি? নিম্ন মধ্যবিত্ত বা খুব গরীব ঘরের ছেলে সব। একেবারেই ইচ্ছে ছিল না। শুধু স্বপনের কথায় এসেছে সে।
স্বামীজি বললেন – “ডাকুন ওকে, একটু কথা বলি।”
অর্জুন এল, একেবারে মায়ের মুখ বসানো। হেরো একটা ছেলে। ময়লা ছিপছিপে এক মাথা কোঁকড়ানো চুল। নাক-মুখ টিকোলো, ধারালো অথচ চোখ দুটো মায়াবী। মনে হচ্ছে চলতে হয় চলছে, আসতে হয় এসেছে। কোনো ঔৎসুক্য নেই চাহনিতে। এই টানাহ্যাঁচড়া তার পছন্দ নয়। যেন জানা আছে কোথায় যাবে শেষে।
চোখের দৃষ্টি নিচু। স্বামীজি উঠে এলেন। পিঠে দু’হাত রেখে বললেন – “কী নাম তোমার?”
সে চুপ করে রইল।
হতাশার অবস্থাটা বুঝতে চাইলেন। আবার স্নেহ মিশ্রিত স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন – “তোমার সাথে আলাপ করবার জন্যে আমি তোমাকে দু’দিন এখানে থাকতে অনুরোধ করছি। তুমি থাকবে?”
অর্জুন শুধু ঘাড় নেড়ে, বাইরের বাগানের দিকে চেয়ে বলল – “হ্যাঁ।”
“ঠিক আছে। আজ দশ তারিখ। তোমার বাবা মা দু-একদিনের মধ্যে তোমাকে নিয়ে আসবেন। আজ বাড়ি যাও।”
অর্জুন এল। স্বপন এসে দিয়ে গেল। স্বামীজি কাউকে ডেকে বললেন – “ওর থাকার জায়গা দেখিয়ে দাও। পৃথ্বীর পাশেই ওকে দিও।”
স্বামীজি স্বপনকে এগিয়ে দিতে গিয়ে বললেন – “আমি কথা দিতে পারব না। যদি কিছু করতে না পারি তবে জানব আমার অক্ষমতা। আমার বিশ্বাস মানুষ পারে না এমন কিছু নেই। শুধু জানি, স্বপ্ন দেখাতে হয় আর বুকের মধ্যে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে শেখাতে হয়। আমি সেটাই চেষ্টা করব।”
অর্জুনকে বললেন – “তুমি পৃথ্বীর কাছে জেনে নিও আমাদের দিনলিপি।” অর্জুন ভিতরে চলে যাচ্ছিল, উনি ডাকলেন, থুতনিটা ধরে বললেন – “তুমি কি মনে করো তুমি কোনো অন্যায় করেছ?”
অর্জুন চুপ মাথা নিচু।
“যদি মনে হয় করোনি তাহলে মাথা উঁচু করো। মাথা উঁচু করে চলবে। মেরুদন্ড সোজা হওয়া দরকার আগে। বাবা মা আর তোমার আরাধ্য ছাড়া মাথা নিচু করবে না। এটাই আমার প্রথম উপদেশ।”
হোস্টেল খুব সাধারণ একটা এল প্যাটার্নের বাড়ি। কিছুটা ইঁট আর কিছুটা দরমার। টিনের চাল। টানা বারান্দা একদিকে। একদিকে তিনটি বেশ বড় ঘর, সঙ্গে বাথরুম ছেলেদের জন্যে। এক এক ঘরে দশটি খাট। কাঠের খাটের ওপরে একটা পাতলা তোষক আর সাধারণ চাদরে ঢাকা একটা করে বালিশ। সব খাটের ওপর ফ্যান নেই। পাশে একটা বেতের তিন তাকের আলমারি। অর্জুন এসব দেখে কেমন বিমর্ষ হয়ে পড়লে। বাবা মা কোথায় ফেলে গেল। দিনের বেলাতেই দু’চারটে মশা উড়ে বেড়াচ্ছে। পাশের বিছানায় পৃথ্বী বসে পড়ছিল কিছু। অর্জুনকে দেখে এক মুখ হেসে বলে – “তোমার আসবার কথা শুনেছি। আমার নাম পৃথ্বী।”
একে একে ঘরের সবার সঙ্গেই আলাপ হল – শ্যামল, অনুপম, বিলাস, কত ছোটবড় সাথী।
পৃথ্বী বলল – “আমি তোমার ক্লাসেই হব। এরা কেউ সেভেন, কেউ সিক্স, কেউ ফাইভ। চলো তোমাকে বাইরেটা দেখিয়ে আনি।” বাইরে এসে মন ভাল হয়ে গেল। চারিদিকে সবুজের সমারোহ। বিশাল পুকুর। সেখানে মাছের চাষ হয়। সবজি আর ফুলের বাগান আছে অনেকটা জায়গায়। আম, জাম, পেয়ারা, কাঁঠালের অনেক গাছ দূরে পাঁচিল ঘেঁষে। আছে একটা ছোট খেলার মাঠ।
অনুপম সঙ্গে এসেছে। বলল – “সবজি আর ফুলের বাগান আমাদেরই দেখাশোনা করতে হয়। ফুল যায় আশ্রমে আর ওই মন্দিরে।” অর্জুন দেখল দূরে একটা ছোট মন্দির দেখা যাচ্ছে।
অর্জুন জিজ্ঞাসা করল – “কোন আশ্রম?”
– “কিছুদূরে স্বামীজিদের একটা বড় আশ্রম আছে। সেখানে অনেক স্বামীজিরা থাকেন। সত্যানন্দ স্বামীজি এই স্কুলটা দেখাশোনা করেন। ওঁদের পুজোর জন্যে লাগে সেই ফুল। সবজি আর মাছ আমাদের নিজেদের লাগে। তারপর স্কুল বসে। স্বামীজিরা আর অন্য মাস্টাররা বাইরের আশ্রম বা শহর থেকে আসেন।”
থাকার জায়গা আর ভাঁড়ার ঘর পেরিয়ে রান্নাঘরের কাছে এসে পৃথ্বী বলল – “এটা রান্নাঘর। ঠাকুর আছে রান্নার। খাবার জায়গা এখানে বারান্দায়। সবাই একসাথে। তোমার অসুবিধা হবে না তো?”
অর্জুন বলল – “না।”
“আর হ্যাঁ, খাবার পর বাসনগুলো কিন্তু আমাদের নিজেদেরই মাজতে হয়।”
দুটি ছেলে মাজছিল। সেদিকে তাকিয়ে থেকে বলল – “ঠিক আছে। এত বড় জায়গা সব স্কুলের?”
পৃথ্বী বলে – “স্বামীজির কথায় মধুর বাবা এই জমি দিয়েছেন। পাঁচিল দিয়েছেন সুহাসের বাবা। ওদের ইঁটভাটা আছে।”
রাত্রে সব ছেলেরা একসঙ্গে বেঞ্চিতে বসে খায়। খাবার ছেলেরাই পরিবেশন করে। মোটা চালের ভাত, ডাল একটা নানা সবজি মেশানো তরকারী আর ডিম ভাজা। গরম গরম ধোঁয়া উঠছে। মুখে দিয়ে অর্জুনের মনে হল অমৃত। কী অপূর্ব স্বাদগন্ধ। টাটকা সবজি স্বাদই আলাদা। এমন সুন্দর খাওয়া ও কোনোদিন খায়নি। ওর মত ছেলেরা সব দিচ্ছে। খাবার পরে হিন্ডেলিয়ামের থালা গ্লাস এক জায়গায় জড়ো করছে। মুখ ধুতে গিয়ে অর্জুন দেখলে পৃথ্বী আর সুহাস দুজনে মিলে মাজছে আর ধুচ্ছে। হঠাৎ করে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হল। বলল – “পৃথ্বী, আমাকে দাও, আমিও মাজি তোমাদের সাথে।”
সুহাস হেসে বললে – “তুমি তো এখন আমাদের অতিথি। যদি আসো পুরোপুরি তাহলে তখন তোমাকেও লাগবে। এখন নয়।” একজন রান্নার লোক এসে বলল – “তোমাকে স্বামীজি ডাকছেন।”
স্বামীজি এখানেই থাকেন। রাত্রে অর্জুনদের সঙ্গেই খেলেন। ঘরে বই পড়ছিলেন। অর্জুন যেতে বই বন্ধ করে পূর্ণদৃষ্টি দিয়ে দেখলেন। স্বামীজির দৃষ্টির মধ্যে একটা স্নিগ্ধতা রয়েছে। অভিব্যক্তিপূর্ণ চাহনি। যেন ভিতরটা দেখতে পাচ্ছেন। ধীরে বললেন – “তুমি কী চাও অর্জুন?”
অর্জুন কিছুটা সন্ত্রস্ত। কোনো উত্তর দিল না। উনি বললেন – “দেখো, প্রথাগত লেখাপড়াতে বিরাট জ্ঞান বাড়ে তা আমি বিশ্বাস করি না। পড়াশুনা জীবনের একটা অঙ্গ। প্রথাগত বিদ্যা লাগে চাকরি, বা আরো উচ্চতর পড়াশুনা করতে। আত্মিক কোনো উন্নতি এতে হয় না। তুমি চাইলে নাও করতে পারো। তবে পরবর্তী জীবনে তোমার মা বাবা যখন থাকবেন না তখন কী করে তোমার জীবন ধারণ করবে সেটা ভেবো। কিছু একটা শেখো যা তোমাকে বাঁচতে সাহায্য করবে।”
“আমার পড়াশুনা ভাল লাগে না, স্বামীজি।”
স্বামীজি একটু থামলেন। বললেন – “পড়াশুনা তো জীবনের খুব ছোট একটা ব্যাপার। বাবা মা ব্যাকুল হন কারণ ওঁরা জানেন গতানুগতিক পড়াশুনা তোমাকে অন্তত একটা বেঁচে থাকার রসদ যোগাবে। পৃথিবী বড় শক্ত জায়গা।”
“আমার আপনাদের পরিবেশ খুব ভাল লেগেছে। এখানে সব কিছু সহজ, খোলামেলা। এখানে আকাশ দেখা যায়, বুক ভরে নিশ্বাস নেওয়া যায়। পাখি দেখা যায়। আমি থাকতে চাই।”
“তুমি পাশ করত চাও? খুব বড় হতে চাও? না পড়াশুনা ছেড়ে দিতে চাও? যদি ছেড়ে দাও তাহলে এখানে তোমার জায়গা নেই।”
“আমার সব বন্ধুরা অনেকদূর চলে আমাকে কেউ ভালবাসে না।”
“তুমি কি নিজেকে ভালবাসো?” কোনো উত্তর না পেয়ে বললেন – “বুঝেছি। আমি কথা দিচ্ছি তুমি আমার কথা যদি অন্ধের মত শোনো আর সেইভাবে পড়াশুনা করো তাহলে তুমি অনেকটাই ওদের ধরে ফেলবে।”
“ধরে ফেলব?” উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এই প্রথম অর্জুনের মুখ।
“দেখো জীবন অনেক বড়। কোথায় শুরু করলে কেউ দেখবে না। মনে রাখবে কোথায় গিয়ে থেমে ছিলে। আমার ওপর বিশ্বাস রেখে দেখো।” স্বামীজি হাসি হাসি মুখে চেয়ে রইলেন।
অর্জুন ভাবল, তাই তো। রেসে প্রথম পিছিয়ে পড়েছি তো কী হয়েছে। আমি অনেকদূর যাব।
স্বামীজি অর্জুনের মুখের দিকে তাকিয়ে হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বললেন – “পরিশ্রম করতে পারবে তো?”
অর্জুন মাথা নাড়ল – “হ্যাঁ, স্বামীজি। পারব।”
“ব্যস। তুমি অন্ধের মত আমাকে অনুসরণ কর। আমি তোমার যষ্টি হলাম। এই অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যাব। বিশ্বাস রেখো নিজের ওপর। অনেক বাধা আসবে। কখনও জ্বর, সর্দিকাশি। কখনও হাত পা কোমরে পিঠে ব্যথা। কখনও নিকট আত্মীয়ের জন্যে প্রবল দুশ্চিন্তা হবে। তবুও নিজের রোজকার কাজ, হোম টাস্ক, ক্লাসের বাইরের পড়া থেকে সরে যাবে না।” একটা ঘোরের মধ্যে অর্জুন ঘাড় কাত করল। স্বামীজি যা বলছেন ও তাই করবে।
স্বামীজি বললেন – “কিছু একটা হও যাতে তুমি যে একটা আলাদা সত্ত্বা সেটা সবাই জানে। চোর হলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চোর হও। সৈনিক হলে তোমার বীরত্বের কথা মানুষের মুখে মুখে ফিরুক। ব্যবসা করলে হাজার মানুষকে কাজ দাও। যাই হও মানুষকে ভাগ কোরো না। ভাগ কোরো না হিংসা, সম্পদ, ধর্মের ভিত্তিতে। পড়াশুনা করতেই হবে কেউ বলেনি।”




এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান