প্রতিমা রায়
বুকের ভেতরের কথা মুখে আনা বেশ কঠিন আমি জানি। তাই ভেতরটা কেমন পাক খেয়ে গোলাতে থাকে। সময়ে সময়ে বুকের ভেতরটা চিনচিন করে উঠে অস্বস্তি বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু কথাগুলো আজ বলা দরকার। বলতেই হবে। তাই কথা সাজাতে থাকি, ঠিক যেভাবে আমাদের বাগানের মধুমালতী গাছটায় থোকা থোকা ফুল ফোটে, সেভাবে। তারপর ফুলগুলো ঝরে যায়, আবারও নতুন ফুল ফোটার সময় হয়, গাছটা সবুজ পাতায় আরো উঁচু হয়ে ওঠে, আমার কথাগুলোও তেমনি ফুটে ওঠার পরিবেশের অভাবে কতবার শুকিয়ে গিয়েছে, আবার প্রাণও পাচ্ছে।
আজ মরিয়া কথাগুলো বাবাকে বলতে। কারণ বাবা আজ দারুণ মুডে আছে। কী সুন্দর করে সেজেছে ধুতরো ফুল সাদা ধুতি পাঞ্জাবিতে। ব্যাকব্রাশ করা চুলের সঙ্গে চোখে গোল ফ্রেমের চশমা একবারে পারফেক্ট ম্যাচ। গলায় ফুলের মালায় বাবাকে বেশ উজ্জ্বল দেখাচ্ছে, সঙ্গে খুশিও।
বাবার আজ সাজের কারণ অবশ্য আছে! যা ক্রমশ প্রকাশ্য।
আমি বাবাকে খুঁজতে লাগলাম, পেয়েও গেলাম । বাবা তাঁর বেডরুমের মাঝখানে একটা চেয়ারে বসে। কিন্তু বা-বা বলে ডাকতে গিয়েও পিছিয়ে আসলাম। বাবার ঘরে এখন অনেক লোকজন- ছোটকা মেজপিসি বড়মামা ন’কাকা ভালদিদি জেঠু আরো লতারপাতার আত্মীয়স্বজন। সবাই বাবাকে গোল করে ঘিরে আছে। সবার সামনে আমি কথাগুলো বলব না, বাবাও হয়ত মন দিয়ে শুনবে না, কথা তখন তার গুরুত্ব হারাবে। তাই ঘরের চৌকাঠ থেকে ফিরে আসছিলাম।
পিছন থেকে ডাক এল – “রজতেশ!” বাবার গুরুগম্ভীর গলা।
”আজ্ঞে!” পিছন মুড়ে দেখি বাবা আমার দিকেই চেয়ে আছেন।
মোটা ফ্রেমের চশমার কাঁচগুলো মুছে আবার তা চোখে পরে বললেন -“কিছু বলবে!”
- ”না, মানে তেমন কিছু নয়।”
- ”কিন্তু তোমার চোখমুখ যে বলছে অন্য কথা।”
আমি বিব্রত বোধ করলাম, ঠিক ছোটবেলার মত। বাবা এখনও আমার মনের কথা পড়তে পারেন! কিন্তু বাবাকে আমি – চল্লিশের কোঠা ছুঁয়ে ফেলা রজতেশ সান্যাল – যে এখনও ঠিকঠাক বুঝতে পারি না। আমার অহংবোধে বেশ লাগে।
বাবা ঘর থেকে উঠে এসে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে বলেন – “এখন এখানে কেউ নেই তুমি আর আমি ছাড়া। বলো।”
কতদিন বাদে বাবা আর আমি মুখোমুখি! বাইরে তখন দক্ষিণের মৃদুমন্দ হাওয়া বইছে, তেরচা হয়ে ঘরের কার্নিশ থেকে ঢুকে আসছে একফালি রোদ আর গেটের সামনে পরিজনের মত দাঁড়িয়ে থাকা মায়ের লাগানো জুঁইফুলের গাছে ফোটা জুঁইফুলের গন্ধ চুঁইয়ে পড়ছে সারা বাড়িতে। আমি সুযোগ পেয়ে অনুযোগের সুরে বলি – “আবার রজতেশ কেন? ওটা তো আমার অফিসিয়াল নেম। তোমার কাছে তো আমি পলু । তবে তুমি আমাকে পলু নামে ডাকছ না কেন?”
- ”সে তো তুই যখন ছোট ছিলি, যখন বাবার এই বুকে এঁটে যেতিস তখন। এখন তুই
কতবড় অফিসার, তোর বুক এখন বাবার থেকে অনেক চওড়া, সেখানে কতজনের আশ্রয় বল তো!”
- “বাবা! তুমি আমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছ!”
- ”সরিয়ে কেন দেব রে।” বাবা হাসে।
বুঝতে পারি আমাদের মাঝে এখনও দাঁড়িয়ে আছে দূরত্ব শব্দটা।
আমার কর্মস্থল ব্যাঙ্গালুরু। কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালুরুর দূরত্ব বেশিদূর নয়। কিন্তু এ দূরত্ব বাবা বা আমি কেউ অতিক্রম করতে পারিনি। বলা ভাল চেষ্টা করিনি। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দূরত্বের পাঁচিলটা যে যার মত করে লম্বা করেছি। মা যখন মারা যায় আমি এসেছিলাম। মায়ের মৃত্যুশোক আমাকে স্পর্শ করেছিল ভীষণভাবে। বাবা সান্ত্বনা দিয়ে গিয়েছিল ক্রমাগত। তারপর ব্যাঙ্গালুরু ফিরে কাজে যোগ দিলাম। ধীরে ধীরে আবার সব স্বাভাবিক হয়ে গেল। মাঝেমধ্যে বাবাকে আমি ফোন করতাম, বেশিরভাগ সময় বাবা আমাকে ফোন করে খবর নিত। বাবা ছেলের মধুর সম্পর্ক একটা ফোন কলের ভেতর ঝুলে রইল।
এরকম ঝুলেই থাকত, ডায়েরিখানা না পেলে। ডায়েরিটা আমি বাবার খাটের নীচে আবিষ্কার করলাম। ঘুম আসছিল না, তাই বাবার খাটে এসে শুয়েছিলাম। বালিশের নীচে শক্ত লাগল। তুলতেই দেখি – কী সুন্দর লাল ভেলভেটে বাঁধানো ডায়েরিখানা। বেশ নধর তার অবয়ব। এর আগে কখনো দেখিনি। নিছক কৌতূহলেই সেটা তুলে নিই আর নাড়াচাড়া শুরু করি। দেখি – পাতায় পাতায় বাবা তার কথাগুলো সাজিয়ে রেখেছেন।
পাতা উল্টে উল্টে আমি পড়তে লাগলাম। আমার না বুঝতে পারা বাবাকে অক্ষর কথায় উপলব্ধি করছি । কখনো থমকে যাচ্ছি অনেকক্ষণ। যেমন এই জায়গাটায় এসে – বাবা লিখেছে – ‘আজকাল বড় একা লাগে। একাকীত্ব বড় অসহায় করে দেয়। তখন প্রিয়জনদের কাছে পেতে খুব ইচ্ছে করে । কিন্তু সবার এত সময় কোথায়!’
আমার চোখের কোন দুটো ভেজা ভেজা হয়ে ওঠে। এই প্রথম বাবাকে বুঝতে পারার জন্য একদিকে খুব আনন্দ সঙ্গে কষ্ট হল। বাবা তার মানে মায়ের মৃত্যুর পর এত কষ্ট পেয়েছেন। আমাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন, আর আমি ভেবেছি – মৃত্যু জীবনের স্বাভাবিক পরিণাম, বাবা নিজের মত করে দিব্যি আছেন।
আমি চোখের কোণদুটো শুকনো করতে আমাদের বাড়ির উঠোনের নিমগাছটার নীচে এসে দাঁড়াই। নিমের শুকনো পাতায় শনশন আওয়াজ ওঠে। উঠোনে শুকনো পাতা ঝাঁট দিতে দিতে মা বলত – “জানিস নিমপাতা কেবল বাইরে থেকে তেতো, একবার এ গাছের গুণ চিনতে পারলে মুগ্ধ হতে হবে পলু। তাই গাছটার যত্নআত্তি করিস।”
আমি অস্ফুটে বললাম – “ব্যাঙ্গালুরু থেকে এসে এ গাছের যত্নআত্তি কীভাবে সম্ভব!”
বাবার ডায়েরির পাতাগুলো আমার সামনে ফরফর করে উড়ছে। বাবা লিখেছেন – ‘দূরত্বকে সবসময় মিটার কিলোমিটারে নয়, একটু আবেগ দিয়ে মেপো, তাহলেই তাকে ছুঁতে পারবে।’
আমি মুখে শব্দ করে উঠলাম – “বাবা!” আর সঙ্গে সঙ্গে ডায়েরিটার বুকে শুয়ে থাকা অক্ষরগুলো যেন জেগে গেল। আমি বুঝতে পারলাম বাবা আমার মধ্যে এতদিনে একটা গভীর সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে।
পাশে টেবিলে ঢাকা জল এক ঢোকে শেষ করে দেখি বাবা কখন সেখানে এসেছে। বাবার চোখ দুটো বোজা, বাবা হেলান দিয়ে বসে আছে। ডায়েরির কথাটা বেমালুম চেপে রেখে এভাবে শুরু করলাম –
”আচ্ছা বাবা তোমার মনে আছে – মাধ্যমিক পরীক্ষার পরের দিন ন’কাকা আমার নামে তোমার কাছে নালিশ করেছিল।”
বাবা চোখ খুলে সোজা হয়ে বসেন। অতীত কথায় মনে মনে বেশ খুশি হয়ে বলেন – “মনে আবার থাকবে না। তুই বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলি। তোর কাকা বলেছিল ঘুরতে যাসনি, তোরা বারে বসে ড্রিংক করেছিলি।”
- ”হাঁ বাবা, ওটাই ঠিক ছিল। তুমি আমাকে বিশ্বাস করেছিলে, কাকাকে নয়। কিন্তু কাকা মিথ্যে বলেনি। আমরা সত্যি বারে বসে…।”
- ”আমি জানতাম। তবে তোর মা বিশ্বাস করেনি। মা তো, ছেলের কোনও দোষ দেখতে পেত না।”
আমি মনে মনে বলি – “জানি বাবা। ডায়েরিটা আমার কাছে আছে। ডায়রি মানে দিনলিপি, তুমি যে ডায়েরি লিখতে তা তো জানতাম না আমি।”
মুখে বলি – “তাহলে আমায় শাস্তি দিলে না কেন?”
- ”সব অপরাধে শাস্তি পেলেই প্রায়শ্চিত্ত কি হয় পলু? বকাঝকা বা শাস্তি দিলে তুমি ভেবে নিতে কি আর হবে ওই তো। তারপর আবার করতে। আমি তা চাইনি পলু। আমি চেয়েছিলাম তোমার ভেতরে সংশোধন। বাড়িতে বড়রা জানার পরও তোমায় আস্থা রেখেছে, এটা ফিল কর। তারপর সেই বিশ্বাসটা ফিরিয়ে দাও।”
আমি বিড়বিড় করে বলি, “বাবা! তারপরও তো কতকিছু করেছি। রণজেঠুকে আমি একদম পছন্দ করতাম না। রণজেঠুর সঙ্গে তুমি গল্প করতে, তাস খেলতে। সেদিন বিকেলে রণজেঠু বাড়িতে এল। বেশ পরিপাটি করা পাজামা পাঞ্জাবি, পায়ে সুন্দর স্নিকার্স। চোখে রিমলেস স্পেকট্যাকেল। তুমি বললে – রণ আয়। আজ জমিয়ে তাস খেলি। আমি বসে বসে সব দেখছিলাম। সন্ধ্যা নামার মুখে তোমাদের খেলার আসর ভাঙল। মা জেঠুকে ট্রে-তে করে ফুলছাপা কাপে চা দিয়ে গেল, তুমি জেঠু চা খেতে খেতে গল্প করছিলে। তখনই জেঠু তার চশমাটা আর খুঁজে পায়নি। তোমারা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছিল। সিদ্ধান্তে এসেছিলে – চশমাটা বোধহয় বাড়িতেই জেঠু ফেলে এসেছে। জেঠু অপমানিত বোধ করে। তারপর থেকে জেঠু আমাদের বাড়িতে আর আসেনি।
পরের দিনই আমাকে পলাশপুরের মেলা দেখাতে নিয়ে গেছিলেন, সময় পেলেই আমার সঙ্গে এ খেলা ও খেলা খেলতেন। তারপর থেকে বাড়িতে কেউ এলে তার কিছু আর খোয়া যেত না।”
কথাগুলোর স্মৃতিচারণ করে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে এতক্ষণে খেয়াল হয় – বাবা এত সাজগোজ করলেও আগের থেকে অনেক রোগা হয়ে গেছেন, গালের চোয়াল বসা উপশিরাগুলো বেরিয়ে পড়েছে। আচ্ছা বাবার সুগার প্রেসার লেভেল ঠিক আছে তো? বাবা ডাক্তার দেখিয়ে ওসব চেক করিয়েছেন তো? নিশ্চয় করিয়েছেন। মেজপিসি তো বলে – “তোর বাবা চিরকাল স্বাস্থ্য সচেতন।”
বাবার ডায়েরিটা কি পরিপাটি! একটা পাতাও তার ফাটা বা নোংরা নয়। কোথাও এতটুকু দাগ নেই। আমি ঠিক করলাম এটার যত্ন নেব। যাতে ধুলো না পড়ে, পোকায় না কাটে।
বাবা হাত নেড়ে ডেকে একেবারে তার পাশে বসতে বললেন। ছোটবেলার মত একটা মিষ্টি গন্ধ ভেসে আসছিল। আমি গন্ধের উৎস সন্ধান করতে লাগলাম। বাবা ফিসফিস করে বললেন – “জানিস পলু, বাবা আর সন্তানের সম্পর্কটা অনুভবের, বাল্যে বাৎসল্যের, কৈশোরে পথপ্রদর্শকের, যৌবনে বন্ধুত্বের আর শেষে- উল্টো অভিভাবকত্বের। যেমন এই বুড়ো বয়সে তুই সবসময় আমায় বলিস- এটা করবে না, ওটা খাবে না। এরকম আর কী। খুব এনজয় করি এগুলো জানিস।”
আমি বাবার দিকে তাকিয়েই থাকি। মনে মনে বিড়বিড় করি – বাবা! আমার বাবা! এক অনাবিল আনন্দে মন ভরে যায়। ভাবি বাবা কি মায়ের চেয়েও বেশি ভালবাসতেন আমাকে! তাই কি ভুল ঠিকের সীমা লঙ্ঘন করলে কখনো কখনো মনে হতো চরম দাবদাহে শীতল ছায়ার মতো বাবা তো আছেন – ভয় কী? বাবা সব সামলে দেবে।আর ঠিক তখনই আমার জীবনের ভুল ঠিকগুলো হুড়মুড় করে বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়, প্রকাশ পেতে চায় ডানা মেলে! আমি অস্থির হয়ে উঠি।
বাবার দিকে তাকিয়ে দেখি – বাবা চুপ করে উল্টো দিকে জানালার বাইরে আমাদের উঠোন বাগানের দিকে তাকিয়ে আছেন। জানি আমি নিজে না জানতে চাইলে বাবা আর কিছু বলবেন না। চিরকাল নীরবতা বাবার আশ্রয়।
একটা লম্বা শ্বাস নিই, তারপর মাথা ঝুঁকিয়ে আমি বলি – “বাবা গেটের সামনে স্বর্ণচাঁপা গাছটার ফুল ধরেছে। গন্ধ পাচ্ছেন?”
- ”হাঁ। পাশে রঙ্গন করবী কামিনী গাছগুলো আছে রে?”
- ”আছে বাবা।”
বাবা এবার মুখ খোলেন – “কতকালের সঙ্গী সব। তোর মা ওসব চারা নিয়ে এসেছিল। যত্নও করতে পারতো। মা নেই। ওদেরও সব বয়স হয়ে গেল। ওগুলোর কি দিন ফুরোলো?”
আমি চুপ করে যাই। বাবার ইঙ্গিতটা আমি বুঝতে পারি। কিন্ত মুখে কিছু বলতে পারলাম না, মনে মনে বলি – “তুমি তো জানো বাবা, আমি কখনো এখানে ফিরে আসব না, চাইলেও ফিরতে পারব না। এতবড় বাড়ি তো পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলাম।”
বাবার চোখদুটো বেশ ঘোলাটে লাগল। আমি ডাকলাম – “বাবা!”
কথা ঘোরাতে বাবা বললেন – “তুমি কিছু খেয়েছ?”
আমি বললাম – “তুমি আমার সঙ্গে যাবে বাবা?”
- “কোথায়?”
- ”আমার সঙ্গে । ব্যাঙ্গালোরে।”
বাবা মুখটা উপর দিকে একটু তুললেন, বোধহয় বুক ভরে শ্বাস নিলেন। শ্বাসের সঙ্গে কি দীর্ঘশ্বাসও থাকে পাশাপাশি! জানি না। তারপর বললেন – “আমার সন্তান তো যে সে নয়, রেসের ঘোড়া। রেসের ঘোড়া এই বেতো ঘোড়াকে বইবে কীভাবে? তোমার কাছে গিয়ে তোমার ভার বাড়াতে চাই না।
আমিও ছাড়ার পাত্র নই। শরীর মনের সব জোরটুকু এক করে বললাম – ‘তোমার ডায়েরিটা আমি পড়ছি বাবা, ওসব তোমার মনের কথা নয়…। মুখ কি সবসময় মনের কথা বলতে পারে!’
——————-
- ”কিরে পলু তুই এখানে, তোকে তখন থেকে খুঁজছি। ওদিকে পুরুতমশায় বাৎসরিক ক্রিয়াতে বসে গেছেন যে! কী করিস, আয়।”
ছোটপিসি বলতে বলতে আমার কাছে চলে আসে। তার পিছু নতুপিসি।
- ”বাবা মানে আশ্রয়, একটা ছাতা, এত সহজে কি…। গতবছর মানুষটা এখনো ছিল। দেখতে দেখতে একটা বছর পার হয়ে গেল” – কথাগুলো বলে নতুপিসি চোখে আঁচল চাপা দেয়, তার সঙ্গে যোগ দেয় ন’কাকা, জেঠু, ভালদিদি।
আমি সবার অলক্ষ্যে ডায়রিটা সরিয়ে রাখলাম, বাবার সবকিছুর মত, ওটাতেও তো কেবল আমারই অধিকার। তবে অস্বস্তি লাগছে ডায়েরির শেষ পাতাটা পড়া হয়নি মানে পড়তে পারিনি বলে। বড় ঝাপসা ওখানটা, আসলে কয়েক ফোঁটা জলের দাগ লেগে অক্ষরগুলো ঝাপসা হয়ে গেছে। একবার ভাবলাম – কাউকে দেখায় যদি এই ঝাপসা জায়গাটা পড়ে দিতে পারে।
তারপর মনে হল – আমি ছেলে হয়ে পড়তে পারছি না, অন্য কেউ কেমন করে পারবে!




এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান