এই পরবাস – শেষ পর্ব

শুভা আর শ্রী পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিল। অরুণ এগিয়ে এসে শ্রীয়ের মাথায় হাত রাখেন। শ্রী অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। এই অরুণ রায়চৌধুরী? এ তো বিখ্যাত মানুষ! এই তার ভাশুর? আজ পর্যন্ত কেউ একটা ছবিও তাকে দেখায়নি! কেন? অরুণ তখন বলছেন – “ছোটকা বলেছে বটে সায়নের বউ খুব খুব ভাল মেয়ে। বাড়িটা ওইই দাঁড়িয়ে থেকে সারিয়েছে। কিন্তু সে যে এমন বুদ্ধিমতী তা তো জানতাম না?”​ 

এই পরবাস – পর্ব ৭

​​স্নেহময় দেখছিলেন চিঠিটা। কিছুদিন হল তাঁর মনের মধ্যে একটা অন্য চিন্তা বাসা বেঁধেছিল। অরুণের বয়স কম হল না। একা একা প্রবাসে। ও কি কখনও এ বাড়িতে ফিরবে না? একদিনের জন্যেও নয়? কত পাখি আকাশে ওড়ে। তারাও তো একবার বাসায় ফেরে! অরুণকে কতকাল দেখেন না! কষ্ট হয়।

এই পরবাস – পর্ব ৬

ইঁট পড়েছে কেন কে জানে? শুভার ঘরের গা ঘেঁষে ইঁটের পাহাড় হয়েছে। এখন চারিদিক বন্ধ। এই আঁধারপুরীতে কেউ আসে না। তবু শুভা জানলা দরজা বন্ধ করল। হলুদ কম পাওয়ারের বাল্ব জ্বালিয়ে আলমারির সামনে এসে দাঁড়ালো। নিরাবরণ শরীর তার। কত বয়স হল শুভার? সেজকাকাবাবুর অনেক বয়সে ছেলে হয়েছে। তার বাবারও তো বয়সে সন্তান!

এই পরবাস – পর্ব ৫

স্নেহময় একসময় গান্ধীর ভক্ত ছিলেন খুব। খদ্দরের ধুতি পাঞ্জাবি ছাড়া এখনও কিছু পড়েন না। রাজীব গান্ধী মারা যাওয়ার পর থেকে ভারতের রাজনীতি নিয়ে আর মাথা ঘামান না। বীতশোক মুখে কিছুতেই প্রকাশ করতে পারেন না, একদা সাম্যবাদে বিশ্বাসী তিনি মরিচঝাঁপির পর কিছু কিছু মানুষের মুখের দিকে তাকাতে ঘেন্না পান। 

নীল পাঞ্জাবি কালো ধুতি 

প্রায় ৭-৮ মাস পরে, অক্সিজেনে তখন পুজো পুজো গন্ধ। নতুন জামার মসমস, নতুন জুতোর ফোস্কা, পুরনো বন্ধুর হইচই, পুরনো রেস্টুরেন্টে নতুন মেনু, সব চলছিল নিজের তালে। উলটোদিকের টেবিলে আমাদের মতোই আরেক দল, একইরকম হুল্লোড়ে মত্ত। শুধু মুখগুলোই অচেনা ….. উঁহু, একটা মুখ তো বেশ চেনা। আরিব্বাস। নীল পাঞ্জাবি কালো ধুতি যে।

আমি পুনমের বাবা 

সুখের দিন বড্ড তাড়াতাড়ি বোধহয় কেটে যায়! যেদিন আমার বাড়িতে গোলাপী রঙের সামনে বাস্কেট দেওয়া লেডিবার্ড সাইকেলটা এল, খুশিতে আমাকে দেখিয়ে সাইকেলে চড়ে একপাক দিয়ে এল পুনম। তা দেখে পাড়ার রকে ফিসফিসিয়ে শব্দ উঠল - 'পাপা কি পরী।' বুকটা কেমন  চিনচিন করে উঠল।

এই পরবাস – পর্ব ৪

অভিমান হয় শ্রীর। কেন? সদরে গেলে কী হবে? মহাভারত অশুদ্ধ হবে? মুখ নীচু করে সে উঠোনে মেলে রাখা কাপড় টানে। ভাঁজ করে আলনায় রাখে। নিজের রাজ্যের কাজ পড়ে আছে। সারতে থাকে। দালানের জানলা দিয়ে চোখে পড়ে শুভা চুপ করে পুকুরপারে দাঁড়িয়ে।

এই পরবাস – পর্ব ৩

সারাটা বেলা বড় বিমর্ষ হয়ে রইলেন। এইটুকু মেয়ে! কী হল যে। বেলা বাড়লে গলিতে পুলিশের আনাগোনা দেখা গেল। আর ঠিক তখনই ছাদে একটা দুটো করে পরিবারের সবাই আসতে শুরু করল। ঠাকুরদাদের আর অন্যান্য ভাইয়ের পরিবার সব আসতে শুরু করেছে। ছাদে ছাদে আনাগোনা করা যায়। কিন্তু এটা কি মজার ঘটনা?

রাগরঞ্জনী – পর্ব ১ – দরবারী

রচনা - সম্বুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় হেমন্তের সন্ধ্যা। অস্তগামী সূর্যের লাল আভা ফতেপুর সিক্রির লাল পাথরকে শেষবারের মতন চুম্বন করল। আরক্ত লাল পাথরের অলিন্দে দাঁড়িয়ে যোধা ভাবতে লাগলেন, আজ তিন দিন হল জালাল-এর দেখা নেই। জালালুদ্দিন, ভারত সম্রাট আকবর, শিকারে গেছেন। হেমন্তের আগ্রা বড়ই রুক্ষ, বিধুর, ব্যাকুল। যোধার মনে যেন তারই প্রতিবিম্ব।দূর থেকে আসা আওয়াজে যেন সম্বিত... Continue Reading →

এই পরবাস – পর্ব ২

সকালে অনেকটা সময় এভাবে কাটলে তিনি শান্তি পান। তাঁর শান্ত চেহারাটা যেন আরও শান্ত হয়ে থাকে। সে সময় সায়ন খবরের কাগজ নিয়ে বসে তাঁর সামনে। জ্যোতি বসুর প্রধানমন্ত্রী হওয়া হল না, এই নিয়ে সায়ন দুঃখ প্রকাশ করছিল। স্নেহময় তার দিকে চেয়েছিলেন। হঠাৎ বললেন, "প্রধানমন্ত্রী কেমন হলে দেশের ভাল হবে বলে তুমি মনে করো?"

এই পরবাস – পর্ব ১

স্নেহময় দেখেছেন শ্রীয়ের কথার মধ্যে প্রচ্ছন্ন হয়েও কোথাও আদেশ লুকিয়ে নেই। স্নেহময় যেন শিশু। এমন করেই কথা বলে। ছাদের দিকের দরজার কাছে একবার গেলেন। কিন্তু শ্রী মিশুকে। স্নেহময় জানেন। অথচ সকলে কত ভেবেছিল। শহরের মেয়ে। এখানে এসে কত দেমাক দেখাবে! কলকাতার কলেজে পড়তে গিয়ে দেখেছেন। মফস্বলি কুটিলতা খুব বোঝে না তারা।

আমার ডাক্তারি

-’কি বলবো ডাক্তারবাবু, আমার বড় বিপদ। আপনার নাম শুনে অনেকদূর থেকে আসা, এখন আপনিই ভরসা। দেখুন যদি কিছু করতে পারেন। কত ডাক্তার, কত কবিরাজ দেখিয়েছি। কত সাধু-সন্ত, বাবাজীর মাদুলি-কবচ পরেছি। কিছুতেই ঠিক হবার নাম নেই।

Blog at WordPress.com.

Up ↑