প্রচলিত সাহিত্যরীতিকে অস্বীকার করে একটা নতুন কিছু করার জন্য কল্লোলের কলরোল। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাবে তা যথেষ্ট নয়। উৎসাহ ছিল যথেষ্ট কিন্তু অভাব ছিল অর্থের। তবু 'কল্লোল' বেরিয়েছে। সাড়ে তিন টাকা দিয়ে একটা ছোট প্রেস থেকে হ্যাণ্ডবিল ছাপানোর আগেই 'কল্লোল' ছাপা শুরু হয়েছে। দীনেশরঞ্জন লিখেছেন - "ইহার পূর্ব্বেই কিছু কিছু কপি প্রেসে ছাপিতে দেওয়া হয়। বিধাতার সাহায্যে ১৩৩০-এর ১লা বৈশাখ কল্লোল ছাপিয়া বাহির হইল।"
নেওড়ার ধারে ধারে…
লিস, ঘিস, চেল নদী পেরিয়ে মালবাজারে এসে যখন পৌঁছালাম সাতটা বেজে গেছে। লাটাগুড়ি বাজার থেকে বেশ কিছুটা ভিতরে যখন ঢুকেছি, শুনশান চারিদিক তখন। রাস্তাতেও আলো খুবই কম। রাস্তার অবস্থাও তথৈবচ। একদম অজানা গন্তব্য। এইভাবে কোনোদিন বের হইনি… বেশ থ্রিলিং লাগছে।
আমার বড়দিন
- "তোমাদের দেশে অমৃত পাওয়া যেত না? সমুদ্র তো অনেক ছিল, মন্থন করতে পারোনি! জানো, আমাদের দেশে ঈশ্বর কেন কত অসুরেরও মৃত্যু হয় না, রক্তবীজের এক ফোঁটা রক্তে আরও একশটা রক্তবীজ জন্মায়। পেরেক ঠুকে ঠুকে তোমার শরীর থেকে ওরা এত রক্ত বার করে দিল তার থেকে আর একটা যীশু জন্মাল না! দেখো তোমার মায়ের কত কষ্ট।"
অদ্ভুত অডবুক
শুধুই কি মানুষ ভূত হয়? উঁহু। আরও অনেক কিছু হয়। যেমন ধরুন, এক ভদ্রলোক ৩৫ বছর ধরে একটি পাড়ার রকে বসতেন, এখন থাকেন অন্য পাড়ায়। সেই রকে গত ৩৫ বছর ধরে সকাল ৮টায় চা খেতেন, পেপারটি পড়ে সাইডে রাখতেন, একটি পেন তার ওপরে।
ট্রামের কথা
এরপর পুনরায় ট্রাম চালু হয়, শিয়ালদা থেকে বউবাজার, সেখান থেকে ডালহৌসি হয়ে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত। এই ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় তখন ট্রাম চলত। সেসময় ছিল এডওয়ার্ড লিটন-এর সময়কাল। রবীন্দ্রনাথ তখন সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ করেছেন। কলকাতায় তখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি, তাই ঘোড়ায় টানা ট্রাম চলত।
শতবর্ষে শোভা সেন
প্রথম স্কুল কলকাতায় হলেও ছাত্রীটির জন্ম কিন্তু কলকাতায় নয়। ১৯২৩-এর ১৭ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ঢাকায় ডাক্তার নৃপেন্দ্রনাথ সেনগুপ্তর ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন ছাত্রীটি। নাম শোভা সেনগুপ্ত। যখন তিনি জন্মগ্রহণ করেন তখন বিশ্বের পরিবেশে লেগেছে অন্য ঢেউ। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক।
বাবার ডায়েরি
কতদিন বাদে বাবা আর আমি মুখোমুখি! বাইরে তখন দক্ষিণের মৃদুমন্দ হাওয়া বইছে, তেরচা হয়ে ঘরের কার্নিশ থেকে ঢুকে আসছে একফালি রোদ আর গেটের সামনে পরিজনের মত দাঁড়িয়ে থাকা মায়ের লাগানো জুঁইফুলের গাছে ফোটা জুঁইফুলের গন্ধ চুঁইয়ে পড়ছে সারা বাড়িতে। আমি সুযোগ পেয়ে অনুযোগের সুরে বলি - "আবার রজতেশ কেন? ওটা তো আমার অফিসিয়াল নেম।
যমের বাড়ি কলকাতা
তবে বেশিরভাগ লোকে মরত কলেরায়, ম্যালেরিয়ায়, পেটের রোগে অথবা অজানা কোনো জ্বরে। এত রোগ ও রোগীর কারণে ডাক্তারেরও অভাব ছিল না। তবে দেশীয় লোকেদের চিকিৎসার জন্য ছিল কবরেজি, হাকিমি, ঝাড়ফুঁক, তন্ত্রমন্ত্র, তাবীজ কবচ এইসব। এতে রোগী বাঁচল কি মরল তাতে কোনো অসুবিধা নেই, বরং এই সমস্ত চিকিৎসার প্রতিই বিশ্বাস ছিল অগাধ।
পুরনো কলকাতার নাম রহস্য
এই বাগবাজারটা আসলে ছিল পেরিন সাহেবের সাজানো গোছানো বিস্তীর্ণ বাগান। এখানে সাহেব মেমরা এক সময় বৈকালিক ভ্রমণ করে বেড়াত। এখানে পেরিন সাহেব একটি বাজারও বসিয়েছিলেন। পেরিন সাহেবের বাগান ও বাজার এই দুইয়ে মিলে হয়েছে বাগবাজার। কাজেই বাগবাজারের নামের সাথে বাঘের কোনো সম্পর্ক নেই।
গুড় -পাটালি
কথায় বলে সমুদ্র কিছুই লহে না, সমস্তই ফিরাইয়া দেয়। বঙ্গভঙ্গের সমুদ্র তরঙ্গের পুনরাঘাতে তাহাদিগের পিতাকে পশ্চিমের এই পারে ফিরাইয়া দিল বটে, কিন্তু সে অনেক পরে। ততদিনে তাহাদিগের জীবন সংগ্রামের কেঁচেগণ্ডূষ হইয়াছে। একটি অসহায়া নারী ও তাঁহার চারিটি ক্ষুদ্র শিশু।
জুলে লাদাখ
লেহ্ থেকে অনেকটা দূরে রুক্ষ পাহাড়, ঊষর মরুপথ পার করে এখানে একটু চোখের আরাম। ভয়ঙ্কর শীত পেরিয়ে এখন চাষের খেত সবুজ। আঙুরলতা লতিয়ে আছে মাচায়। টুনি বালবের মত কমলা রঙের অ্যাপ্রিকট গাছে গাছে জ্বলজ্বল করে ঝুলছে। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের এই গ্রামে দেশভাগের রেখা রাতারাতি টানা হয়েছিল।
শারদীয়া অডিওবুক ২০২৩
'ও কলকাতা'র যাত্রা শুরুর প্রায় এক দশক পথ অতিক্রান্ত। ওয়েবপত্রিকা, প্রিণ্ট ও ইবুক প্রকাশনার পাশাপাশি ২০২৩ এর শারদীয়ায় আমাদের উদ্যোগ একটি অডিওবুক, যার বিষয়বস্তু মহালয়া এবং লেখকের কল্পনায় দেবী দুর্গার নব-রূপায়ন। প্রতিটি রচনায় থাকবে একটি বিশেষ অনুভব - হাস্য, বিষাদ, আনন্দ এরকম নবরসের যে কোনও একটি প্রতীক। কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না।



